সূচনাঃ
কন্টেন্ট লেখা এক ধরণের আর্ট। আমরা সচারচার ওয়েব পেজের যে লেখাগুলো পড়ে থাকি তাকে কন্টেন্ট বলে। এই কন্টেন্ট যারা লেখে তাদের কন্টেন্ট রাইটার বলে।
একজন কন্টেন্ট রাইটারের সার্থকতা আনে তার লেখা কতজন ভিজিটর কে আকর্ষন করছে তার ওপর। যদি আপনার লেখা আকর্ষিত না হয় তাহলে, মানুষ আপনার লেখা পড়বে না। আমরা কেউ পুরো পেজ পড়তে চাই না।
আপনি চিন্তা করুণ আমরা যখন নিউজপেপার পড়ি তখন প্রথম থেকে শেষ পযর্ন্ত পড়ি না। শুধু মাত্র প্রথম পেজ স্ক্যান করি। যেযে হেডলাইন বা টপিক আকর্ষণ করে সেগুলো পড়ি। একটা ওয়েব পেজে ঢুকে আমরা একই কাজ করে থাকি। বইয়ের মতো পুরো পেজটা পড়ার ধৈয্য আমাদের থাকে না।
তাই শর্টকাটে হেডলইনটা পড়ে ঠিক করি পুরো লিখা পড়ব কি না? এজন্য একজন কন্টেন্ট রাইটারের উচিৎ সুন্দর ও চমৎকার হেডলাইন দিয়ে শুরু করা।
তাছাড়া আরো অনেক জিনিস রয়েছে যেমনঃ লিস্ট, বুলেটিন, লাইন হায়লাইট, সারাংশ ইত্যাদি ভিজিটর দের আকর্ষণ করে থাকে।
হেডলাইনের সাথে সাথে একটা ওয়েবসাইটের হোমপেজকে সাজানো গোছানো হতে হবে। যাতে সহজে পুরো ওয়েবসাইটে কোথায় কোন জিনিস আছে বুঝা যায়। এবং একজন ভিজিটর সকল লিংক সহজে পেতে পারে। একজন কন্টেন্ট রাইটারের যে যে জিনিস খেয়াল রাখতে হবে।
- মেইন পেজ যেন সহজে স্ক্যানেবল হয় তা খেয়ার রাখা।
- ভিজিটরের আকর্ষণ ও টপিকের দিকে খেয়াল রেখে হেডিং বানাতে হবে।
- সাবলিল টেক্স ফরমেট ব্যাবহার করতে হবে, ইটালিক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা।
- বেশি রঞ্জিত কালার ব্যবহার না করা ও সাধারণ ভাষায় উপস্থাপন করা।
আপনার কন্টেন্টা হতে হবে তথ্যবহুল কন্টেন্ট এবং সাবলিল ভাষায়। কন্টেন্ট এর মধে্য সরাসরি কথা বলতে হবে, বেশি ভনিতা করা যাবে না। এতে ভিজিটর মিসগাইড হতে পারে। লেখাটি যথাসম্ভব সাধারণ করা।
শর্ট এবং সরাসরি বক্তব্য দেয়া
- একটা বাক্যে একটা বা সর্বোচ্চ হলে দুইটার বেশি আইডিয়া না দেয়া। এর বেশি হলে ভিজিটর কনফিউজ হবে, তারা মূল জিনিস খুজে পাবে না।
- জটিল sentence এর কারণে সহজ কথা জটিল হতে পারে।
আকর্ষিত হেডলাইন ব্যবহার করা
- সমগ্র পেজের একটা সামারাইজেশন কয়েক ওয়ার্ডে বর্ণনা করা।
- অনেক বড় পেজ হলে ছোট ছোট পেজে ভাগ করে নিন। এবং কিছু সাবহেডলাইন ব্যবহার করুন।
কিওয়ার্ড বাছাই করা
- কিওয়ার্ড হল একটা কন্টেন্ট এর মূল বিষয়বস্তু। পেজটা কি সম্পর্কিত? এই পেজ দ্বারা কি করা হয় সবকিছুর উত্তর এই কিওয়ার্ড।
- পেজ টাইটেলে অবশ্যই পেজের মুল কিওয়ার্ড রাখতে হবে।
হাইপারলিংক
- হাইপারলিংক পেজের বামপাশে এলাইন করা শ্রেয়।
- সাইটের পেজের ভিতর লিংক দেয়ার সময় লিংক স্প্লিটার ব্যবহার না করা। এবং লিংকে অদৃশ্য করার চেষ্টা না করা।
জটিলতাহীন ভাষা ব্যবহার
- সুস্পষ্ট ও ক্লিয়ার হতে হবে।
- লেখাটি পাঠকের দিকে খেয়াল রেখে লিখতে হবে, লেখকের দিকে নয়।
- অপভাষা ব্যবহর করবেন না।
আপনার পেজেটির কালার এবং ডিজাইন আকর্ষিত করুন। লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর লিংক নিয়মিত ক্লাইন্টদের কাছে দিন। এখান থেকে ভিজিটর পেয়ে যাবেন। পেজটি গোছালো ও শিক্ষণীয় করে তুলুন। তাহলে আপনার লেখা সফল হবে।
কন্টেন্ট নির্বাচিত (Select) করার প্রক্রিয়া (Process):
কন্টেন্ট লেখার ও প্রকাশ করার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং কাজ এটি। একজন কন্টেন্ট রাইটারের অনেকগুলো বিষয়ের দিকে খেয়াল রেখে কন্টেন্ট সিলেকশন করতে হয়। ভালোভাবে কন্টেন্ট সিলেক্ট করার কিছু সহজ ষ্টেপ দেয়া হল।
- আপনার টপিক অনুযায়ী একটি কন্টেন্ট নিন। কন্টেন্টি নিয়ে পুনরায় চিন্তা করুন, মুক্ত চিন্তা করে দেখুন পেজটি কি বলছে।
- এবার স্ট্রাকচার ও লেখার কৌশল এর দিকে খেয়াল করুন। খুজে বের করুন সাইট বা অর্গানাইজেশন-এর সাথে মিলছে কিনা।
- একজন মানুষকে খুজুন। যিনি ভিজিটরের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে মতামত দিবেন। এবার তার মতামত এর সাথে মিলিয়ে দেখুন আপনি যেটা বুঝাতে চান সেটা আপনার কন্টেন্ট-এ ফুটে উঠেছে কি না? যদি না ওঠে পুনরায় বিবেচনা করুন।
- কিছু প্রশ্নের তালিকা করুন যেমনঃ কি,কেন,কে। এবার আপনার লিখিত কন্টেন্ট এর টপিককে প্রশ্নগুলো করে দেখুন সঠিক উত্তর পান কিনা? না পেলে পুনরায় চিন্তা করুন।
- আপনার কন্টেন্ট পড়ে চিন্তা করুন ভিজিটর কিকি প্রশ্ন করতে পারে। এবার লেখার ভিতর বা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে তার তালিকা দান করুন। অবশ্যই প্রশ্নোত্তর পর্বটি দিন এবং লিস্ট আকারে দিবেন।
- আপনার লেখাটি পুনরায় বিবেচনা করুন এবং সংশোধন করে কাট, পেস্ট, রিরাইট এবং এডিট করুন।
- আগের লেখাটির সাথে মিলিয়ে দেখুন আপনার লিখার মান আরো উন্নত হয়েছে কি না বিচার করুন।
- নতুন লেখাটি ভালো করে পড়ুন। কোনো কিছু বাদ পড়ছে কিনা গভীর চিন্তা করুন। নিজের কাছে প্রশ্ন করে দেখুন। আপনি সকল ষ্টেপ সঠিকভাবে ফলো করেছেন তো। আপনার প্রশ্নোত্তর ও লেখাটি স্টেটফরোয়ার্ড এবং ক্লিয়ার হয়েছে তো। আপনি কি সরাসরি ভিজিটর কে সঠিক তথ্য(information) দিয়েছেন।
- লেখাটি নিয়ে স্যাটিসফাইড (SATISFIED)? তাহলে সকল অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছে ফেলুন।
আসলে একজন ভিজিটর আপনার লেখাটি পড়বে ইনফরমেশন সংগ্রহ করার জন্য। তাই তাকে সেই টপিক রিলেটেড সকল ইনফরমেশন সুন্দরভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে দেয়ার চেস্টা করতে হবে। এতে ভিজিটর খুশি থাকবেন আপনার লেখার প্রতি। এটাই সকল রাইটারের একমাত্র কাম্য।
কিওয়ার্ড বাছাইকরণ প্রক্রিয়াঃ
একটি কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিন এর কাছে কতটা গুরুত্ব পাবে তা নির্ভর করে কিওয়ার্ডের উপর। কোনো ভিজিটর কোনো ওয়ার্ড বা বাক্য লিখে সার্চ করলে, সার্চ ইঞ্জিন খুজে দেখে কোন কোন আর্টিকেল-এর ভিতর এই শব্দ আছে। যেযে আর্টিকেলের ভিতর এই শব্দগুলো থাকবে সেই আর্টিকেল কে ভিজিটরের ভিজিটের জন্য সাজেশন দিবে।
ফলক্রমে ভিজিটর তার প্রত্যাশিত ইনফরমেশন না পাওয়া পযর্ন্ত আর্টিকেল দেখেতে থাকবে।
তাহলে আপনাকে খুজে বের করতে হবে, ইউজার কি কি ওয়ার্ড দ্বারা সচারচার সার্চ করে থাকে।
ইউজারের সার্চকৃত শব্দ আপনার আর্টিকেল এর মধ্যে না থাকলে আপনার আর্টিকেল সার্চইঞ্জিন সাজেস্ট বা র্যাংক করাবে না। এতে আপনি ভিজিটর হারাবেন বা পাবেন না।
এজন্য ব্যবহার করতে পারেন, SSEO Minion, SEOquake, Keyword sufer
কিওয়ার্ড বাছাইয়ের নিয়ম বা গাইডলাইনঃ
কিওয়ার্ড হচ্ছে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর সরুপ হবে। পেজটা কি? বা পেজটা কি কাজের জন্য তৈরি?
- সার্চ করার সময় মানুষ কিওয়ার্ড টাইপ করে।
- সার্চ ইঞ্জিন সেই সমস্ত পেজ খুজে বের করে যেগুলোর কিওয়ার্ড সার্চকৃত কিওয়ার্ড এর সাথে মেলে।
- সার্চইঞ্জিন একটি সামারি তৈরি করে কিওয়ার্ড এর আশপাশের শব্দ নিয়ে। সামারিটি সার্চ এর রেজাল্ট হিসেবে উপস্থাপন করে।
ভাবুন টার্গেটেড অডিয়েন্স কিকি শব্দ(word) সার্চ করতে পারে আপনার পেজটি পাওয়ার জন্য।
- কোন কোন শব্দ তারা সার্চ করবে।
- কোন ওয়ার্ড তাদের সামনে আপনার পেজটি আনতে সাহায্য করবে।
- ক্ষেত্র বিশেষে আপনার অপভাষা ব্যবহার করা। আপনার অপভাষা তাদের অপভাষা নাও হতে পারে।
- সবসময় স্পেসিফিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করা। এতে আপনার কম্পিটিটর কম হবে। পেজটি দ্রুত র্যাংক করবে।
আপনি ইন্টারনেটের বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন সুন্দর কিওয়ার্ড বাছাইয়ের জন্য। কিওয়ার্ড হল ওয়েব কন্টেন্ট এর প্রাণ।
এইটি আপনাকে আপনার অডিয়েন্স এর কাছে পৌছানোর সেবচেয়ে ভালো রাস্তা। তা কিওয়ার্ড বাছাইয়ের ক্ষেতে্র আপনাকে মনোযোগী হতেই হবে।
হেডলাইন তৈরির গাইডলাইনঃ
কন্টেন্ট পড়ার আগে হেডিং পড়া হয়। আপনার টাইটেল বা হেডলাইন দেখে একজন ইউজার ক্লিক করবে কিনা তা ঠিক করে।
মানুষেরা বইয়ের কভার দেখে যেমন বই বিচার করে, তেমনি ব্লগপোস্ট কে টাইটেল দেখে।
টাইটেল (Headline) টি যদি আকর্ষণীয় হয় তবে সহজে একজন ইউজার আপনার লেখাটি পড়বে।
আনেক রিসার্চার জানিয়েছেন, সুন্দর একটি টাইটেল ৭০% ভিজিটর বাড়াতে সক্ষম।আপনার বিসনেস ব্লগের সফলতার জন্য সুন্দর টাইটেল অপরিহার্য।
সুন্দর ও আকর্ষণীয় টাইটেল তৈরি করার নির্দিষ্ট বাধা ধরা নিয়ম নেই। আমরা অনেক রিসার্চ পেপার ঘাটাঘাটি করে কিছু সহজ নিয়ম তুলে ধরলামঃ
- পপুলার হেডিং সূত্রঃ ( নম্বার+ বিশেষণ + কিওয়ার্ড+……) ,হেডিং ভিজিটরের কাছে আকর্ষণীয় করতে নম্বরের বিকল্প নেই। কিওয়ার্ড না দিলে সার্চইঞ্জিন আপনার কন্টেন্ট ভিজিটরের কাছে পৌছুবে না। তাই কিওয়ার্ড ব্যবহার করা আবশ্যক।
- অনেকগুলো টাইটেল তৈরিঃ একটা কন্টেন্ট লিখার আগে বা পরে আপনি টাইটেল নিয়ে অনেক চিন্তা করেন, লেখেন না ,লিখতে হবে। আপনার মাথায় যতগুলো আসে লিখে নিন। তারপর যাচাই বাছাই করে একটি দিন।
- কিওয়ার্ড ব্যবহারঃ আমি আগেও বলেছি কিওয়ার্ডের কথা। আপনি যদি ব্লগিরি হন তবে হয়তো কিওয়ার্ড রিসার্চ করে থাকবেন। কিওয়ার্ড রিসার্চের মাধ্যমে প্রাপ্ত কিওয়ার্ড অবশ্যই টাইটেলে ব্যবহার করবেন। এটি আপনাকে টার্গেটেড অডিয়েন্স এর কাছে পৌছে দিবে, এবং এটা এসিও(SEO) ফ্যাক্ট।
- ক্লিয়ার হেডিং ব্যবহার করা। যা পড়ে আপনার অডিয়েন্স বুঝতে পারে কন্টেন্টটা কি সম্পর্কে এবং কেন তারা এটি পড়বে। পড়ে তাদের বেনিফিট কি হবে। এই সবকিছু উত্তর যদি আপনার টাইটেল দিতে পারে তবেই সেটা সার্থক টাইটেল হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।
- টাইটেল সবসময় ইউনিক বা একদম আলাদা রাখার চেষ্টা করা।
ব্লগের জন্য ইমোশনাল হেডিং তৈরি করতে হবে। যা দেখে ভিজিটর সহজে পোস্টটি পড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবে। ইমোশনাল হেডিং সহজে তৈরির জন্য বিভিন্ন সফটওয়্যার পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
সাবহেডিং তৈরিঃ
ব্লগপোস্টের বিন্যাস (Formatting) অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অধিকাংশ ইউজার প্যারাগ্রাফের ফরমেটিং দেখে কন্টেন্ট বিচার করে থাকে।
একটা ব্লগপোস্ট মূলত বড় প্যারাগ্রাফ হয়। বড় লেখা পড়তে মানুষ সাধারণত ভয় পেয়ে থাকে। ছোট ছোট প্যারায় সাবহেডিং এর মাধ্যমে ভাগ করে দিলে ভয়টা কাজ করে না।
অনেক সময় সাবটাইটেল পড়ে ইউজার বুঝতে পারে ভিতরে কি বলা আছে। মূল হেডিং এর মতো ব্লগপোস্টের জন্য কিছু সাবহেডিং ব্যবহার করুন।
মূল হেডিং এর মতো অতো বিচার করে সাবহেডিং (Subtitle) দেয়ার দরকার পড়ে না। এখানে শুধুমাত্র ভিতরে কি বলা সেটা হেডিং আকারে লিখলেই যথেষ্ট।
- প্যারাগ্রাফটি কি সম্পর্কে তা ছোট লাইন আকারে একবাক্যে লিখা।
- সাবহেডিং টি শ্রুতিমধুর হলে ভাল।
- একটু ইমোশন দিয়ে লেখা যাতে মানুষ পড়তে আগ্রহ প্রকাশ করে।
ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ (Shorter Paragraph):
কন্টেন্ট একটা বড় প্যারাগ্রাফ, যেখানে সাধারণত একটা বিষয়ের বিস্তারিত থাকে।
প্রতিটি পাঠক লেখা পড়ার আগে একবার স্ক্যান করে দেখে কি আছে। ছোট ছোট ব্লক আকারে লিখলে পাঠক সহজে বুঝতে পারে ও পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়। তাছাড়া কেউ বড় লেখা পড়ে মজা পাই না। ছোট ব্লক আকারে পড়লে মজা পায়। তাছাড়া যে ব্লক টা ভালো লাগে না,সেটি সহজে এড়াতে পারা যায়।
আমি তো বড় প্যারাগ্রাফ দেখলেই পড়ি না। কারণ দেখলে মনে হয় এতো বড় লেখা পড়ব কখন। আমার বিশ্বাস আপনিও সেটাই ভাবেন।
এখানে ভাবার কোনো দরকার নেই কত শব্দের মধ্যে প্যারাগ্রাফ লিখব। এর বাধা-ধরা কোনো সংখ্যা নেই। আপনার যত ইচ্ছা লিখতে পারেন।
বড় প্যারাগ্রাফকে খন্ড খন্ড করে নিন। সব এক প্যারায় না লিখে দুই এক লাইন করে নিয়ে এক এক প্যারা গঠন করুন। এতে করে লেখা ছোট ছোট ব্লকে ভাগ হয়ে যাবে।
আশা করা যায়, পাঠকের সহজে চোখে ধবরে ও পড়বে। এবং আপনি ব্লগার হিসেবে সফল হবেন।
বুলেট লিস্ট:
আমদের মাস্তিষ্ক সমতল বা একধালা লেখা পড়তে খুব অনাগ্রহী। অধিকাংশ সময় মানুষ সময় বাচানোর জন্য শর্টকাট খোজে। তারা চাই শুধুমাত্র কাজের অংশটুকু পড়বে।
পাঠকদের সহজে পড়ার সুবিধা করে দেয়ার দায়িত্ব আপনার। তাই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বুলেট লিস্ট আকারে দিন।
অনেক সময় আপনার বড় অদরকারী কথা পড়তে পড়তে তারা আসল জিনিস মিস করতে পরে। আসল পয়েন্টকে আলাদা গুরুত্ব দিতে বুলেট লিস্ট ব্যবহার করা যায়।
কিছু উদাহরণ দেয়া যাক। কুকুর ডাকে ঘেউ ঘেউ, বিড়াল ডাকে মিউ মিউ,কোকিল ডাকে কুহু কুহু।
এবার এটি লিস্ট আকারে দিলে কেমন দেখা যায়। তা হল:-
- কুকুর ডাকে ঘেউ ঘেউ
- কোকিল ডাকে কুহু কুহু
- বিড়াল ডাকে মিউ মিউ
উপরের দুটি লেখা এক হলেও লিস্ট আকারে উপস্থাপনকৃত লেখাটি বেশি আকর্ষণীয়। যে কেউ নিচেরটা পড়তে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে বলে আমার মনে হয়।
লিস্টের মাধ্যমে সরাসরী অডিয়েন্সকে বেশি প্রভাবিত করা যায়। লিস্টের কিছু সাধারণ নিয়ম আছে যেগুলো মানতে হয়। যেমন:
- লিস্টে শুধুমাত্র একটি শব্দ হলে শেষে দাড়ি না দেয়া।
- একই ধরণের বাক্য বারবার লিখলেও দাড়ি না দেয়া।
- দুই বা ততোধিক বাক্য লিখলে দাড়ি দেয়া।
- লিস্টের সকল অপশনে একই যতিচিহ্ন ব্যবহার করা।
ওয়েবসাইটে দুই ধরণের লিস্ট এর ব্যবহার হয়। এইচ টি এম এল (HTML) এর ভিত্তিতে তা হল অর্ডার লিস্ট, আনঅর্ডার লিস্ট। সকল কন্টেন্ট ম্যনেজেমেন্ট সিস্টেম এর এডিটরে লিস্ট করার বাটন দেয়া থাকে। এতে সহজে আপনি লিস্ট তৈরি করতে পারবেন।
আকর্ষণীয় ছবি:
“A picture worth thousand words” অর্থ একটি ছবি ১০০০ শব্দের থেকে মূলবান।
ব্লগপোস্ট শুধুমাত্র শব্দের হয় না এখানে ছবি ব্যবহার নতুন মাত্রা যোগ করে। কন্টেন্টকে সুন্দর ও ভিজ্যুয়াল করার জন্য শব্দের কোনো জুড়ি নেই। কি কি কারণে আমরা কন্টেন্ট-এ ছবি দিতে পারি তা হল:-
- ভিজ্যুয়ালাইজেশন: কন্টেন্ট এর সবকিছু লিখে প্রকাশ করার পাশাপাশি ছবি দিলে পাঠকের বুঝতে সুবিধা হয়। ছবিটি অবশ্যই কন্টেন্ট এর সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে হবে। আমরা “Related post” or “popular post” এ ছোট থাম্বনেইল ছবি পোস্টি দেখতে আগহ তৈরি করে। এতে সাইটের বাউন্সরেট কম হয়।
- সোস্যাল মিডিয়া ট্রাফিক: বর্তমান সময়ে সোস্যাল মিডিয়া থেকে প্রচুর ভিজিটর আসে। সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট বেশি পছন্দ। কন্টেন্টে এ ছবি থাকলে তারা আকর্ষিত হয়। ভালো ছবি থাকলে কন্টেন্ট শেয়ার করে।
- সাইজ বৃদ্ধিতে: ছোট কয়েক লাইনের কন্টেন্টে ছবি ব্যবহার করলে কন্টেন্ট আকারে বড় দেখায়। আবার কন্টেন্ট এর বিষয়ে ক্লিয়ার ধারণা করা যায়।
ছবি ব্যবহারের আরো অনেক উপকার রয়েছে। তবে ছবি দেয়ার সময় কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হয়।
- কপিরাইট ফ্রি ছবির ব্যবহার করা।
- ছবির রিসাইজ করে নেয়া। বিভিন্ন ছবির সাইজ ভিন্নরকম হয়। আপনার ব্লগসাইটের মতো করে রেশিও রিসাইজ করুন।
- অনেকসময় ছবির সাইজ অনেক পিক্সেল হয়। যার কারনে পেজ লোড নিতে অনেক সময়ে নেয়। যেটা সাইট র্যাংক এর উপর খারাপ প্রভার ফেলে , তাই ছবিটি কম্প্রেস করে সাইজ কমায় ফেলেন।
- অবশ্যই অল্টার টেক্সট (Alt text) ব্যবহার করুন।
বেশি বেশি ট্রফিকের জন্য ভালো কন্টেন্ট লেখার জুড়ি নেই। আর ভালো কন্টেন্টে ছবির কোনো বিকল্প নেয়। ব্লগপোস্ট আকর্ষণীয় করার জন্য ছবি একটি বড় হাতিয়ার। এই হাতিয়ার হাতছাড়া করার কোনো মানেই হয় না।
পরেরবার কন্টেন্ট বা ব্লকপোস্টে ছবি অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
ইমেজ এর ক্যাপশান:
ছবি বা ভিডিও যোগ করার মাধ্যমে ব্লগপোস্টে আলাদা মাত্রা যোগ করা যায়। ছবিটা কি সম্পর্ক তা সঠিকভাবে বর্ণনা করে ছবির ক্যাপশন।
পোস্টরিলেটেড ছবি ব্যবহার করে, ছবিতে কি প্রদর্শিত হচ্ছে তা গ্রাহকের নিকট বর্ণনা করার মাধ্যম ছবির ক্যাপশান। ছবির ক্যাপশন ওয়েবসাইটে অল্টার ট্যাগ (Alter tag) নামে পরিচিত।
তাছাড়া ছবি সার্চইঞ্জিনগুলো পড়তে পারে না বা কি আছে তা সম্পর্কে অবগত নয়। ক্যাপশনের মাধ্যমে ছবিতে কি আছে সেটি সার্চইঞ্জিনগুলোকে বলে দেয়া হয়। কেউ যখন গুগলে সার্চকরে তখন ছবিটাকে ফলাফল হিসেবে দেখাবে।
অল্টার ট্যাগ এ সঠিকভাবে অপটিমাইজ করা হলে এসিও (SEO) এর ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হয়।
কোনো বিষয় সার্চকরা হলে সাজেশনে আপনার ব্লগের ছবি প্রদর্শিত হতে পারে।
ভিডিও-এর ব্যবহার :-
মানুষের কাছে ভাব প্রকাশের অনেক মাধ্যম রয়েছে। যেমন: লেখা, ছবি, অডিও, ইশারা-ইজ্ঞিত, ভিডিও ইত্যাদি। এগুলো মধ্যে ভিডিও সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।
দর্শককে কোনো বিষয়ে ক্লিয়ার ধারণা দিতে ভিডিও এর বিকল্প নেই। কারণ ভিডিওর ভিতরে অডিও, ছবি, ইশারা অর্থাৎ ভাব প্রকাশের সকল উপাদান উপস্থিত। এজন্য সবার কাছে ভিডিও এত প্রিয়।
বর্তমান সার্চইঞ্জিনগুলো (Yahoo, Google, Bing) তাদের সার্চের ফলাফলে ভিডিও থাকা কন্টেন্টকে প্রায়রিটি দিয়ে থাকে। কন্টেন্টে লেখার পাশাপাশি ভিডিও থাকলে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবে।
এ সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। সম্ভব হলে অবশ্যই কন্টেন্ট এ ভিডিও যোগ করুন।
ভিডিও দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু টেকনিক ব্যবহার করুন।
- HD quelity ভিডিওর ব্যবহার।
- ক্লিয়ার ভয়েজ ব্যবহার করুন।
- ভিডিওটি নিজের সার্ভারে না রেখে YouTube এ রাখুন। এতে হোস্টিং খরচ কমবে। ভিডিওটি ট্রাস্টেড সাইটে থাকার কারণে গুগল আপনার সাইটকে বিশ্বাস্ত মনে করে।ভিডিওর লোডিং টাইম কমবে।
এসব কথা মাথায় রেখে পরেরবার কন্টেন্ট-এ ভিডিও রাখার বিষয়টি চিন্তা করুন। ভালো একটি ভিডিও ব্লগসাইট কে এগিয়ে রাখবে -এটা আমার গ্যারান্টি।
টেবিল কন্টেন্ট ব্যবহার:
টেবিল কন্টেন্ট কি? এটা হল বইয়ের সুচিপত্রের মতো, সকল কন্টেন্ট এর হেডিংসহ লিংক একজায়গায় রাখা। যাতে পাঠক সহজে পুরো কন্টেন্ট এর কোথায় কি আছে জানতে পারে। সহজে তার পছন্দের বিষয় পড়তেও পারবে।
অনেক সময় কন্টেন্ট বড় হওয়ার কারণে মানুষ পড়তে অনাগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। তাছাড়া হয়তো তার পুরো জানার দরকার নাও থাকতে পারে।
একটা নির্দিষ্ট বিষয় জানার জন্য ব্লগটি পড়তে আসে। অনেক লেখার কারণে বিরক্ত হয়ে ফিরে যায়। আপনার বাউন্স রেট বাড়ে। এটা এড়ানো সবচেয়ে ভালো উপায় টেবিল কন্টেন্ট ব্যবহার। এতে পাঠক শুধুমাত্র তার পছন্দ বা দরকারী লেখা সহজে খুজে পাবে এবং সেটা পড়বে।
টেবিল কন্টেন্ট ব্যবহার করার কারনে লিংক বিল্ডিং হয়। এটা এসইও রিলেটেড বিষয় হওয়ার কারণে এখানে আলোচনা নয়। এসইও টিউটোরিয়ালে জানাবো।
টেবিল কন্টেন্ট অনেক দরকারী একটি জিনিস। আপনার থিমে টেবিল কন্টেন্ট অপশন না থাকলে ডেভলপার দ্বারা এটা করিয়ে নিন।
হাইলাইটিং কালার:
কন্টেন্ট লেখার সময় সবার বুঝার সুবির্থে অনেক উদাহরণ দিতে হয়। যেটা লেখার কিছুটা কম গুরুত্ব বহন করে। অনেক সময় পাঠকের মূল পয়েন্ট বুঝতে অসুবিধা হয়।
কন্টেন্ট এর মূল পয়েন্ট না ধরতে পারলে পাঠকের কোনো লাভ হয় না। এতে পাঠক বিরক্ত হয়ে ফিরে যায়।
পাঠক যাতে লেখার মূল বিষয়টি থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য হাইলাইটিং কালার ব্যবহার করা হয়। হাইলাইটিং কালার দ্বারা কোনো লেখাকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়।
সহজে যেন পাঠকের দৃষ্টিআকর্ষণ করা যায় তার জন্য হাইলাইটিং কালার ব্যবহার করি।
অনেকসময় প্লেনটেক্সট (plaintext) পড়তে পড়তে বিরক্তবোধ করি। বিরক্তি দূর করার জন্য হাইলাইটিং কালার খুব কাজে দেয়।
কেন্টেন্ট লেখার সময় সুযোগ পেলেই সেখানে হাইলাইটিং কালার ব্যবহার করুন। পাঠকের মন কাড়া লেখা লিখতে এর চেয়ে সহজ ও সুন্দর বিকল্প হয় না।
রিপিটেশন না করা:
রিপিটেশন হচ্ছে মুদ্রাদোষের মতো একটি বিষয়। একই কথা বারবার লেখাকে রিপিটেশন বলে।
আপনার লেখার ভিতর একটি বিষয় নিয়ে বারবার আলোচনা করা হলে বা একই কথা বারবার বললে কার ভালো লাগে। অ্যাজ এ হিউম্যান, আমার মনে হয়না বিষয়টি কেউ পছন্দ করবে?
লেখার সময় এই বিষয়টির দিকে বিশেষভাবে নজর দিন। একই লেখা অপ্রয়োজনে বারবার লিখছেন না তো? লিখে থাকলে সেটা পরিহার করুন।
আমার মনে হয়, পাঠকের কাছে যত বিরক্তকর বিষয় আছে তার ভিতর রিপিটেশন অন্যতম। লেখার ওয়ার্ড বাড়ানো বা যেকোনো কারনে এটা করে থাকলে, তা পরিহার করুন।
পাঠকযদি বুঝতে পারে আপনার স্বার্থে তার সময় নষ্ট করছেন তাহলে ক্ষমা করবে না। তাই এখন থেকে সাবধান হোন।
বিশেষ ফন্ট:
আমাদের চারপাশে অনেক রকমের ফন্টের ব্যবহার দেখে থাকি। কিছু বাংলা বা ইংলিশ ফন্ট সত্যিই দারুন অকর্ষণ করে আমাদের। সুন্দর ও গোছালো জিনিস সবাই পছন্দ করে। তাই এসব ব্যবহার করে আরও সুন্দর করে তুলুন।
ফন্টের ক্ষেত্রেও বিষয়টা অন্যরকম নয়! সুন্দের গোছালো ফন্ট পাঠককে আরো পড়তে উৎসাহিত করে।
ব্লগিং যেহেতু লেখা-বেস একটি প্লাটফর্ম তাই এখানে লেখার সৌন্দয অনেকটাই দরকার হয়। এক্ষেত্রে বিশেষ ফন্টের ব্যবহার অনেক এগিয়ে রাখে।
আমি প্রিমিয়াম ফন্ট ব্যবহার করার পরমর্শ দেব না। এটার দরকারো পড়বে না। ফ্রিতে অনেক সুন্দর সুন্দর ফন্ট পাওয়া যায়। তার মধ্যে হতে পছন্দমতো একটি বাছাই করুন ও আপনার ব্লগে ব্যবহার করুন।
মোটা ও ইটালিক অক্ষর :
মোটা অক্ষর যাকে ইংরেজিতে বোল্ড (Bold text) বলে। কোনো লেখারকে বা কোনো বাক্যকে কেন বোল্ড করা হয়? আপনি ঠিক ধরেছেন, সেই বাক্যকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বোঝাতে।
ইটালিক অক্ষরও মূলত একই কাজে ব্যবহার করা হয়। আবার উপরে আলোচিত হাইলাইটিং কালার ও লেখার ভিতর একই কাজ করে থাকে।
এগুলো ব্যবহার করার উদ্দেশ্য কোনো প্যারা, বাক্য বা অক্ষরকে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করা। পাঠককে সেটা পড়তে উৎসাহিত করা।
এখানে একটা বিশেষ দিক নজরে রাখা উচিৎ। সবকিছু ভালো কিন্তু অতিরিক্ত কোনো কিছু নয়। অপ্রয়োজনীয় জিনিসকে বিশেষভাবে হাইলাইট করার জন্য এগুলো ব্যবহার করবেন না। এতে গ্রাহক বিরক্ত হবে। তাছাড়া এটা লেখার মানকে নষ্ট করে।
হাইপার-লিংক:
ব্লগিং এর সাথে জড়িত সবাই কমবেশি লিংক শব্দটির সাথে পরিচিত। যারা ব্লগিং করে কমবেশি লিংক শেয়ার করে থাকে।
কন্টেন্ট এর মধ্যে লিংক দিয়ে থাকি বিভিন্নভাবে এবং এটা করা খুব জরুরিও বটে। কিন্তু সেটা সঠিকভাবে না করলে কন্টেন্ট এর মান খুবই বাজে হবে। তাই লিংক শেয়ার করার সময় বিশেষ কিছু বিষয় খেয়াল রাখব।
- লেখার মাঝে কোথাও খোলা লিংক ব্যবহার না করা। যেমন:
- যথাসম্ভব ব্লগের কন্টেন্টগুলো লিংক দেয়া। বাইরের লিংক কম দেয়া।
- লিংক সবসময় ক্লিকবেস শব্দের মাধ্যমে দেয়া।
- লিংককৃত শব্দটিতে হাইলাইট করা যেন পাঠক সহজে ক্লিক করতে পারে।
উপরের বিষয়গুলো খেয়াল রেখে লিংকিং করুন। লেখার মধ্যে অবশ্যই লিংক শেয়ার করবেন। এতে পাঠক আরেকটা কন্টেন্ট পড়তে আগ্রহী হবে। সাইটে বেশি বেশি সময় কাটাবে ও সাইট সহজে গুগল র্যাংকিং পেজে চলে আসবে।
ব্লগে ভিজিটর ধরে রাখার জন্য লিংকিং পদ্ধতি অনেক ইফেক্টিভ। এটা ৯০% কাজে দেয়। তাই লেখার ভিতর কমপক্ষে ২ থেকে ৩ টি লিংক দেয়ার চেষ্টা করুন।
খুববেশি লিংক শেয়ার করবেন না। অতিরিক্ত লিংক লেখার মান খারাপ করে। পঠকের মনে খারাপ প্রভাব পড়বে।
আরও দেখুন : ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর সেরা ৫টি উপায়।
ক্যাটাগরি নির্ধারণ:
ব্লগে অনেক ধরনের পোস্ট করা হয়ে থাকে। ক্যাটাগরি করে দিলে ভিজিটর সহজে বুঝবেও সেই রিলেটেড পোস্ট সহজে খুজে পাবে।
সারাংশ (Sammerize) দেয়া:-
সামারাইজ করা মানে কোনো বড় লেখার সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করার একটি পদ্ধতি।
ব্লগপোস্ট লেখা কিন্তু উপন্যাস বা গল্পলেখার মতো নয়। কারণ পাঠক গল্পপড়ে মজা নেয়ার জন্য। সবাই ব্লগ মজা নেয়ার জন্য পড়ে না। কেউ কেউ শুধুমাত্র ইনফরমেশন নেওয়ার জন্য ব্লগ পড়ে থাকে।
যারা বিনোদনের জন্য পড়ে তাদের জন্য লেখা বড় হলে ভালো হয়। কিন্তু ব্যস্ত মানুষের কথা মাথায়ও রেখে ব্লগ লিখতে হয়।
যেহেতু পোস্টে টপিকের পুরোটা বোঝানোর দিক মাথায় রেখে লেখা হয়, শুধু মাত্র ইনফরমেশন দিলে সবাই বোঝে না। এতে লেখা অনেক বড় হয়।
যারা শুধুমাত্র ইনফরমেশন পেলেই বুঝতে পারে, এবং শর্টে পড়তে চাই তাদের জন্য পুরো লেখার সামারাইজ করে নিচে দিতে হবে।
লেখা সামারাইজ করে দিলে সবার জন্যই উপকার হয়। যাদের ধৈয্য কম ও কম পড়তে ভালোবাসে তারা খুশি হয়। আবার যারা সমস্তটা বুঝার জন্য পড়েছে তারা সামারাইজ পড়ে মূল পয়েন্ট সহজে মনে রাখতে পারে।
সামারাইজ সকল পাঠকদের খুশি করে, যা লেখকের একমাত্র উদ্দেশ্য। আমরা ব্লগলেখার পরে সামারাইজ করে দেব। সামারাইজ করার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
- যথেষ্ট ছোট করে সামারাইজ তৈরি করা।
- সামারাইজ মূল পোস্টের এক-তৃতীয়াংশের বড় হবে না।
- অবশ্যই মূল বিষয়ের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
রেফারেন্স দেয়া:
রেফারেন্স!! আসলে রেফারেন্স হল আপনার প্রদত্ত তথ্যের উৎস বলে দেয়া।
ব্লগ যারা পড়বে তারা অধিকাংশ আপনার অপরিচিত, এটাই স্বাভাবিক। মানুষ তার হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া কাউকেই বিশ্বাস করতে চাই না। সেখানে আপনি তাদের পরিচিত নন। তাহলে তারা আপনাকে কেন বিশ্বাস করবে।
তাছাড়া আপনার লেখার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে, এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এবং কারোর মনে সন্দেহ তৈরি হতেও পারে।
আপনার ইনফরমেশন এর সত্যতা বুঝানো জন্য উৎসের উল্লেখকরা জরুরী। এই তথ্যের উৎসের উল্লেখকে ইংরেজিতে রেফারেন্স বলা হয়। বাংলায় এটাকে অনেকে দলিল বলে থাকে।
রেফারেন্স দিলে পাঠকের অনেক উপকার হয়। এটি ব্লগের ইমেজকে উন্নত করে। প্রকৃতপক্ষে সবার জন্য উপকার।
- পাঠকের মনে লেখায় প্রদত্ত তথ্যের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে না।
- আপনি লেখার ভিতর সকল ইনফরমেশন দেন না বা দেয়া সম্ভব হয় না। প্রকৃতউৎসের সন্ধান দিলে পাঠকের ইচ্ছা হলে উৎসটা পড়তে পারে।সে আরো তথ্য নিতে পারবে।
- কোনো লেখকের থেকে হেল্প নিলে ক্রেডিট দেয়া নৈতিক দায়িত্ব। রেখারেন্সের মাধ্যমে সেটা সম্ভব হয়।
কতশব্দের মধ্যে ব্লগপোস্ট লিখতে হয়:
ব্লগপোস্ট বা কন্টেন্ট লেখা হয় ভিজিটরকে বিভিন্ন তথ্য দেয়ার জন্য। কোনো একটি টপিকের উপর বিস্তার আলোচনা করা হয়। ব্লগপোস্ট লেখার সময় লেখককে খেয়াল রাখতে হবে, টপিকের কোনো বিষয় বাদ না যায়। টপিকের সম্পর্কে পুরো ক্লিয়ার ধারণা পাঠক পাচ্ছে কি না।
গুগল শুধুমাত্র কন্টেন্ট এর শব্দসংখ্যার উপর ভিত্তি করে র্যাংক করায় না। অনেকগুলো সুচক বিবেচনা করে কন্টেন্ট র্যাংক করানো হয়।যেমন:- ইউজার এক্সপেরিয়েন্স, বাউন্সরেট, কন্টেন্ট কোয়ালিটি ইত্যাদি।
অধিকাংশ কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের মতে, কন্টেন্ট এর শব্দসংখ্য ১০০০ এর উপরে হলে র্যাংক (Rank) করা সহজ হয়।
কন্টেন্ট তৈরি করায় সময় কন্টেন্টকে কিছু প্রশ্ন করুন:
- – কাকে বলে?
- –কেন?
- –কি?
এই কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে আপনার কন্টেন্ট তৈরি। কন্টেন্ট এর শব্দসংখ্যা নিয়ে একদম চিন্তা করবেন না। উপরের প্রশ্নগুলো খেয়াল করুন।
আমার মতে, শব্দসংখ্যা সর্বনিম্ন ৫০০ হলে গুগল র্যাংক করানো জন্য যঠেস্ট। একটা বিষয় নতুনদের ভিতর থাকে যে, যত শব্দসংখ্যা তত র্যাংক। এটা একেবারেই একটি ভুল ধারণা।
কন্টেন্ট লেখা হয় মানুষের জন্য, কম্পিউটারের জন্য নয়। ইউজার যদি পড়ে বিরক্তবোধ করে তবে পেজ কখনো গুগল র্যাংক করাবে না।
আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, গুগল কিভাবে বুঝবে কন্টেন্ট ইউজারের হয়েছে বা হয়নি! অবশ্যই বুঝতে পারবে, কিভাবে বুঝবে? পাঠকের কন্টেন্ট ভালো না লাগলে দ্রুত সাইট হতে বের হবে ও আপনার সাইটের বাউন্সরেট বাড়বে। তাছাড়া আপনার সাইটের লিংকে ঐ ব্যক্তি আর ঠুকতে চাইবে না। এতে সহজে গুগল আপনার কন্টেন্ট এর কোয়ালিটি সম্পর্কে আন্দাজ করতে পারবে। এবং পেজকে দ্রুত ডিমোশন করবে।
কন্টেন্ট লেখার সময় শব্দসংখ্যা নয়, পাঠকের দিকে নজর দিন। ইউজার কন্টেন্ট ভালোবাসলে গুগল দ্রুত র্যাংক করাবে।
কন্টেন্ট লেখা একটি অভ্যাসের ব্যাপার। প্রতিদিন লিখতে থাকুন দেখবেন একসময় খুব ভালো রাইটারে পরিণত হয়েছেন।
উপসংহারঃ-
এতক্ষণ আমরা দেখলাম কিভাবে ভালো কন্টেন্ট তৈরি করতে হয় এবং সেই কন্টেন্ট কিভাবে গুগলে র্যাংক করানো যায়। আমি চেষ্টা করেছি সম্পূর্ণ তুলে ধরার জন্য। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবার সুস্থ কামনা আশা করে আজ এখানে লেখাটা শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ!